photo anigif_zps14jgsh76.gif

Monday, November 13, 2017

জিভ বলবে শরীরের সমস্যা কোথায়



শরীর খারাপ হলে চিকিত্‍সকরা রোগীর জিভটা দেখেন। তার রঙ কী করম, তার আকারই বা কেমন। আসলে এগুলো দেখে শারীরিক সমস্যার কথা জানা যায়। কয়েক শতাব্দী পুরনো এই পন্থা আসলে চীনাদের চিকিত্‍সা পদ্ধতির অঙ্গ ছিল।
১) জিভের ওপর পাতলা সাদা আবরণ : জিভ মূলত আমাদের পরিপাকতন্ত্রের খবরাখবর জানায়। কারণ জিভ থেকেই এই তন্ত্রে শুরু। জিভের ওপর যদি পাতলা সাদা একটি আস্তরণ থাকে, তা হলে বুঝবেন হজমে কোনও সমস্যা নেই। পরিপাকতন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে।
২) মোটা সাদা আস্তরণ : এটা শরীর খারাপের সংকেত। এটা হলে বুঝবেন শরীরে কোথাও চোট রয়েছে অথবা ভেতরে ভেতর শরীর খারাপ হচ্ছে। শরীরে কোনও একটি অংশ ঠিক মতো কাজ করছে না।
৩) হলুদ আস্তরণ : মূলত জ্বর হলে জিভের ওপর হলুদ আস্তরণ পড়ে। দেহের তাপমাত্রা অনেক কারণে বাড়তে পারে। সেটা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে, শরীরের কোনও অংশ ফুলে গিয়ে থাকতে পারে।
৪) উপরিভাগে লাল চাকা-চাকা চামড়া উঠে যাওয়া: এর অর্থ শরীরে এনার্জি বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। কোনও অ্যালার্জির কারণেও এমনটা হতে পারে। চর্মরোগ, র‌্যাশ প্রভৃতি রোগের লক্ষণ হতে পারে।
জিভের রং কী রকম হলে শরীরে কোথায় সমস্যা দেখা যায়:
১) ফ্যাকাশে : জিভের রং যদি ফ্যাকাশে হয়ে যায় বুঝতে হবে হজম ঠিক মতো হচ্ছে না। ভেতরে ভেতরে ঠান্ডা লেগে রয়েছে। এর সঙ্গে যদি জিভ বার বার শুকিয়ে যায়, তা হলে তা অ্যানিমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। তার সঙ্গে ইনসমনিয়া, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া প্রভৃতি রোগের লক্ষণ হতে পারে।
২) উজ্জ্বল লাল রং : এ রকম রং দেখলে বুঝবেন শরীরে কোথাও ইনফেকশন রয়েছে। প্রথমে জিভের ডগার দিকটাই লাল থাকবে। পরে তা পুরো জিভে ছড়িয়ে পড়বে।
৩) জিভের পাশে লাল রং : খুব মশলাযুক্ত খাবার খেলে, প্রতুর ফ্যাট জাতীয় এবং অ্যালকোহলের মাত্রা শরীরে বেশি হলে এমন রং হয়। কোষ্ঠকাঠিণ্যের মতো সংস্যা থাকলেও জিভের রং এমন হয়।
৪) নীল রং : শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলে জিভের রং পাল্টে গিয়ে নীল বর্ণ হতে থাকে। ডাক্তারি ভাষায় একে সায়ানোসিস বলে। যদি এমনটা দেখেন অবিলম্বে চিকিত্‍সকের কাছে যান। রক্তে সমস্যা, হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো রোগ থাকতে পারে। তাই দেরি করা ঠিক নয়।
৫) কালো রং: সাধারণ কারও কারও জন্ম থেকেই এ রকম রং থাকতে পারে। তবে যদি হঠাত্‍ কালো রং দেখেন তা হলে বুঝবেন এক সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ব্যাক্টেরিয়া জমা হয়েছে জিভে। তবে শুরু থেকেই এমনটা হবে না, প্রথমে হলুদ, তার পরে ব্রাউন, তার পর কালো রং হবে।
৬) হলুদ রং : জিভের রং সাধারণ এমন হয় না। যখন হবে, তখন বুঝবেন লিবারে বড় সংস্যা রয়েছে। সম্ভবত জন্ডিস হয়ে গিয়েছে। দেরি না করে ডাক্তারের পরাম৪শ নিন।
৭) পার্পল রং : দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে কোনও সমস্যা থাকলে জিভের রং পার্পল হতে শুরু করেন। এটার অর্থ শরীরে ভিটামিন B-এর ভীষণ ঘাটতি রয়েছে।
মনে রাখবেন, শরীরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল জিভ। তবে আমরা অনেকেই এর খেয়াল রাখি না। প্রতিদিন জিভ পরিষ্কার রাখলে অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। রোজ সকালে দাঁত মাজার সময়ই জিভ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। সুস্থ থাকবেন।